Summary
লেনদেনসমূহকে জাবেদায় লিপিবদ্ধ করার পর হিসাবের শ্রেণি অনুযায়ী স্থানান্তর করা হয়। বছরের বিভিন্ন সময়ে নগদ ও বাকিতে পণ্য ক্রয় ও বিক্রয় হয়। খতিয়ান বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা লেনদেনগুলোকে একত্রিত করে মোট ক্রয়, বিক্রয় এবং আয়-ব্যয়ের পরিমাণ নির্ণয়ে সাহায্য করে।
এই অধ্যায় শেষে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জানা যাবে:
- পাকা বই হিসেবে খতিয়ানের ধারণা ও গুরুত্ব।
- খতিয়ানের শ্রেণিবিভাগ।
- জাবেদা ও খতিয়ানের মধ্যে পার্থক্য।
- ‘T’ ও ‘চলমান জের’ ছকে হিসাব প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া।
- বিভিন্ন ধরনের খতিয়ানের ডেবিট ও ক্রেডিট জেরের তাৎপর্য।
লেনদেনসমূহকে প্রাথমিকভাবে জাবেদায় লিপিবদ্ধের পর হিসাবের শ্রেণি অনুযায়ী যথাযথ হিসাবে স্থানান্তর করা হয় । সারা বছর বিভিন্ন সময়ে নগদে ও বাকিতে পণ্য ক্রয় ও বিক্রয় করা হয়। ক্রয় জাবেদা হতে বাকিতে ক্রয় এবং নগদান বই হতে নগদ ক্রয় একত্রিত করা ব্যতীত মোট ক্রয় জানা সম্ভব নয়। খতিয়ান বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা ক্রয়, বিক্রয় ও অন্যান্য আয়-ব্যয়সমূহকে একত্রিত করে মোট ক্রয়, মোট বিক্রয় এবং অন্যান্য সকল আয় ও ব্যয়ের মোট পরিমাণ নির্ণয়ে সাহায্য করে। একইভাবে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সম্পদ, দায় ও মালিকানা স্বত্ব সংশ্লিষ্ট লেনদেনসমূহের ফলাফল খতিয়ানে সংরক্ষিত সংশ্লিষ্ট হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। হিসাবের উদ্বৃত্ত নির্ণয়ের প্রক্রিয়া জানা এবং হিসাবের উদ্বৃত্তের ভিত্তিতে গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাইয়ের পাশাপাশি ব্যবসায়ের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা লাভ করা এই অধ্যায়ের বিষয়বস্তুর অন্তর্ভুক্ত।

এই অধ্যায় শেষে আমরা-
- পাকা বই হিসেবে খতিয়ানের ধারণা ও গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে পারব।
- খতিয়ানের শ্রেণিবিভাগ করতে পারব।
- জাবেদা ও খতিয়ানের পার্থক্য নিরূপণ করতে পারব।
- ‘T” ও ‘চলমান জের’ ছকে হিসাব প্রস্তুত করে হিসাবের জের নির্ণয় করতে পারব।
- বিভিন্ন ধরনের খতিয়ানের ডেবিট ও ক্রেডিট জেরের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করতে পারব।
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণির হিসাব যেমন- সম্পদ, দায়, মালিকানা স্বত্ব, আয়, ব্যয় ও লাভ-ক্ষতির হিসাব সংরক্ষণ করা হয়। এসব হিসাবসমূহকে এককথায় খতিয়ান বলা হয়। একটি চলমান ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে সম্পদ, দায় ও মালিকানা স্বত্ব সম্পর্কিত হিসাবসমূহের সাধারণত প্রারম্ভিক ডেবিট বা ক্রেডিট জের থাকে। নির্দিষ্ট সময়কালে সম্পন্ন লেনদেনসমূহের ফলাফল খতিয়ানে সংরক্ষিত হিসাবসমূহে যথাযথভাবে স্থানান্তর করা হয়। হিসাবকাল শেষে প্রতিটি হিসাবের জের নিরূপণ করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের উক্ত সময়কালের আয়, ব্যয়, লাভ ও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয় এবং একটি নির্দিষ্ট তারিখে তার সম্পদ, দায় ও মালিকানা স্বত্বের পরিমাণ জানা যায় ৷
বৈশিষ্ট্য :
- প্রতিটি হিসাবের শিরোনাম প্রদান করা হয় ।
- খতিয়ান প্রস্তুতে ‘T” ছক বা ‘চলমান জের’ ছক অনুসরণ করা হয়।
- প্রতিটি হিসাবের পৃথক পৃথক জের/ উদ্বৃত্ত নির্ণয় করা হয় ৷
- খতিয়ান প্রস্তুতে জাবেদা সহায়ক বহি স্বরূপ কাজ করে। খতিয়ানে লিপিবদ্ধের সময় জাবেদা পৃষ্ঠা নম্বর উল্লেখ করা হয় ।
- খতিয়ান হতে প্রাপ্ত হিসাবের উদ্বৃত্ত দ্বারা রেওয়ামিল প্রস্তুত করা হয় এবং হিসাবসংরক্ষণ কার্যক্রমের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই করা হয় ৷
খতিয়ান
| সম্পদ | দায় | মালিকানা স্বত্ব | আয় | ব্যয় |
|
নগদান হিসাব আসবাবপত্র হিসাব দেনাদার হিসাব অগ্রিম খরচ হিসাব মজুদ পণ্য হিসাব ভূমি ও দালানকোঠা হিসাব, যন্ত্রপাতি হিসাব, সুনাম হিসাব |
পাওনাদার হিসাব ঋণ হিসাব বকেয়া খরচ হিসাব অনুপার্জিত আয় হিসাব |
মূলধন হিসাব উত্তোলন হিসাব সাধারণ সঞ্চিতি হিসাব |
বিক্রয় হিসাব প্রাপ্ত কমিশন হিসাব প্রাপ্ত বাট্টা হিসাব শিক্ষানবিশ সেলামি হিসাব |
ক্রয় হিসাব বেতন হিসাব কর ও অভিকর হিসাব কুঋণ হিসাব |
লেনদেনসমূহ সুশৃঙ্খল ভাবে সাজিয়ে লিখে রাখা হয় বিধায় হিসাব তথ্য ব্যবহারকারীগণ সহজেই তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য খতিয়ান হতে পেতে পারে। খতিয়ান হতে ব্যবসায়ের আয়, ব্যয়, সম্পদ, দায় ও মালিকানা স্বত্বের পরিমাণ সম্পর্কে ধারণা লাভ করা সম্ভব। রেওয়ামিল প্রস্তুতের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্বৃত্ত খতিয়ান হতে সংগ্রহ করা হয় এবং এর মাধ্যমে হিসাবের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই করা হয়। খতিয়ানের গুরুত্ব ও উপকারিতা প্রকাশের জন্য একটি কথাই প্রচলিত রয়েছে—‘খতিয়ান হিসাবের সকল বইয়ের রাজা'।
জাবেদা ও খতিয়ান উভয়ই হিসাব চক্রের দুইটি ধাপ। খতিয়ান জাবেদা অপেক্ষা অধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যবহার উপযোগী। জাবেদা বই সংরক্ষণ ঐচ্ছিক হলেও খতিয়ান প্রস্তুত বাধ্যতামূলক। খতিয়ানের উদ্বৃত্ত হতে হিসাবের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাইয়ের পাশাপাশি ব্যবসায়ের আর্থিক ফলাফল ও আর্থিক অবস্থা নিরূপণ সহজ হয়। জাবেদা ও খতিয়ান প্রস্তুতে ব্যবহৃত ছকের মাঝে যথেষ্ট অমিল রয়েছে। জাবেদায় শুধু লেনদেনের ডেবিট ও ক্রেডিট পক্ষ শনাক্তকরণ করা হয়, অপরদিকে খতিয়ানে প্রতিটি হিসাবের মোট ডেবিট ও মোট ক্রেডিটের পার্থক্যকরণের মাধ্যমে উদ্বৃত্ত নির্ণয় করা হয়। খতিয়ান সুষ্ঠু ও নির্ভুলভাবে প্রস্তুতের জন্য জাবেদা সহায়ক বইস্বরূপ কাজ করে।
লেনদেন: জানুয়ারি ১,২০১৭ নগদে পণ্য ক্রয় ৫,০০০ টাকা।
জাবেদা দাখিলা:

পোস্টিংয়ের দিকে লক্ষ করলে দেখা যায়, জাবেদায় ক্রয় হিসাব ডেবিট, তাই ক্রয় হিসাবে ডেবিট দিকে লিখা হয়েছে কিন্তু বিবরণের কলামে ক্রেডিট হিসাব খাতের নাম অর্থাৎ নগদান হিসাব লিখা হয়েছে। অপর দিকে নগদান হিসাব ক্রেডিট, তাই নগদান হিসাবে ক্রেডিট দিকে বসেছে কিন্তু বিবরণের কলামে ডেবিট হিসাব খাতের নাম অর্থাৎ ক্রয় হিসাব লিখা হয়েছে। এর দ্বারা ক্রয় হিসাবটি কোন হিসাবের মাধ্যমে ডেবিট এবং নগদান হিসাবটি কী কারণে ক্রেডিট করা হয়েছে তা বুঝা যায় । অতএব কোনো হিসাবের ডেবিট দিকে পোস্টিং হলে বিবরণের কলামে ক্রেডিট হিসাব খাতের নাম এবং হিসাবের ক্রেডিট দিকে পোস্টিং হলে বিবরণের কলামে ডেবিট হিসাব খাতের নাম লিখা হবে।
খতিয়ান প্রস্তুতকরণের ক্ষেত্রে প্রথম ধাপ পোস্টিং এবং পরবর্তী ধাপ ব্যালেন্সিং বা উদ্বৃত্ত নির্ণয়। সাধারণ অর্থে উদ্বৃত্ত বা ব্যালেন্স অবশিষ্ট অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন—৫ কেজি চাল ক্রয় করা হলো এবং ৩ কেজি চাল ভোগ করা হলো, এই ক্ষেত্রে অবশিষ্ট রইল ২ কেজি। হিসাবের জের নির্ণয় অনেকটা এরূপ । হিসাবে পোস্টিং পরবর্তী ডেবিট ও ক্রেডিট দিকের পার্থক্য নির্ণয় করাকে জের টানা বা ব্যালেন্সিং বলা হয় ৷
নিম্নোক্ত দুটি লেনদেন পোস্টিং পরবর্তী নগদান হিসাবের ব্যালেন্স নির্ণয় করা হলে:
২০১৭
মার্চ ৩ নগদ বিক্রয় ২০,০০০ টাকা
মার্চ ১০ আসবাবপত্র ক্রয় ১৫,০০০ টাকা

- হিসাবের ডেবিট ও ক্রেডিট দিকের যোগফল সর্বদা সমান করতে হবে, তাই যে দিকের যোগফল বড় তা উভয় দিকে টাকার কলামে লিখতে হবে। উপরোক্ত হিসাবে ডেবিট দিকের যোগফল বড় হওয়ায় ডেবিট ও ক্রেডিট উভয় কলামে বসানো হয়েছে ২০,০০০ টাকা ।
- উভয় দিকের যোগফলের নিচে দুটি সমান্তরাল রেখা টেনে হিসাব বন্ধ করা হয়েছে।
- সাধারণত নির্দিষ্ট সময়ের শেষ তারিখে হিসাবের ডেবিট ও ক্রেডিট দিকের পার্থক্য নির্ণয় করা হয়। পার্থক্যটি ‘ব্যালেন্স C/D ’ অর্থাৎ ‘উদ্বৃত্ত স্থানান্তর হবে' কথাটি লিখে কম টাকার কলামে বসিয়ে উভয় দিক সমান করা হয়। উপরোক্ত হিসাব মার্চ মাসের, তাই মার্চের শেষ তারিখ ৩১-এ পার্থক্য নির্ণয় করা হয়েছে।
- সময়ের শেষ তারিখের ব্যালেন্স C/D ' পরবর্তী সময়ের প্রথম তারিখে ‘ব্যালেন্স B/D’ অর্থাৎ ‘উদ্বৃত্ত স্থানান্তরিত হয়েছে' কথাটি লিখে বিপরীত পার্শ্বে বসাতে হবে।
- হিসাবের যে দিকটি বড়, ব্যালেন্স সেই নামে পরিচিত হয়। যেমন—উপরের নগদান হিসাবের ব্যালেন্সটি ডেবিট ব্যালেন্স, তাই ১লা এপ্রিল নগদান হিসাবের ডেবিট দিকে ব্যালেন্স B/D লিখে এপ্রিল মাসের খতিয়ান শুরু করা হয়েছে।
| C/D | Carried Down | নিচে নীত / স্থানান্তরিত হবে |
| B/D | Brought Down | উপর থেকে আনীত/স্থানান্তরিত হয়েছে |
| C/F | Carried Forward | সম্মুখে নীত |
| B/F | Brought Forward | পেছন থেকে আনীত |
‘চলমান জের’– ছক

- চলমান জের ছকে হিসাবের জের যেকোনো সময়ে জানা যায় । প্রতিটির পোস্টিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে উদ্বৃত্ত/ব্যালেন্স নির্ণয় করা হয়।
- চলমান জের ছকে উদ্বৃত্ত লেখার জন্য পৃথক কলাম রয়েছে।
| হিসাব পোস্টিং | হিসাবের উদ্বৃত্ত |
| ডেবিট পোস্টিং | ডেবিট ব্যালেন্স |
| ক্রেডিট পোস্টিং | ডেবিট ব্যালেন্স |
| ক্রেডিট পোস্টিং | ক্রেডিট ব্যালেন্স |
| ডেবিট পোস্টিং | ক্রেডিট ব্যালেন্স |
- মোট ডেবিট ও মোট ক্রেডিট পোস্টিংয়ের পরিমাণ নির্ণয় করা হয় না। এই যোগফলের কোনো ব্যবহার নেই।
C/D বা C/F সময়ের শেষ তারিখে নিরূপণ করা হয় এবং এই উদ্বৃত্ত পুনরায় B/D বা B/F নামে পরবর্তী সময়ের প্রথম তারিখে হিসাবের বিপরীত পার্শ্বে লেখা হয়। যখন কোনো হিসাবের মোট ডেবিট ও মোট ক্রেডিট পোস্টিং সমান হয়। ঐ হিসাবের উদ্বৃত্ত শূন্য অর্থাৎ ব্যালেন্স C/D বা B/D লেখার প্রয়োজন হয় না। এই ধরনের হিসাবকে সমতা প্রাপ্ত হিসাব বলা হয়।
হিসাবের সাধারণ/স্বাভাবিক উদ্বৃত্ত
| হিসাবের শ্রেণি | উদ্বৃত্তের ধরণ |
| সম্পদ | ডেবিট ব্যালেন্স |
| দায় | ক্রেডিট ব্যালেন্স |
| মালিকানা স্বত্ব | ক্রেডিট ব্যালেন্স |
| আয় | ক্রেডিট ব্যালেন্স |
| ব্যয় | ডেবিট ব্যালেন্স |
২০১৭ সালের মার্চ ১ তারিখে জনাব শাহীন নগদ ১,০০,০০০ টাকা নিয়ে শাহীন ট্রেডার্স নামে ব্যবসায় শুরু করলেন । উক্ত মাসে তার ব্যবসায়ে অন্য লেনদেনসমূহ ছিল নিম্নরূপ:
মার্চ ২ আসবাবপত্র ক্রয় ২০,০০০ টাকা
মার্চ ৩ পণ্য বাকিতে ক্রয় ৩০,০০০ টাকা
মার্চ ৫ পণ্য বিক্রয় ২৫,০০০ টাকা
মার্চ ৮ বহিঃফেরত ২,০০০ টাকা
মার্চ ১২ পাওনাদারকে পরিশোধ ১০,০০০ টাকা
মার্চ ১৮ ব্যাংকে হিসাব খোলা হলো ১৫,০০০ টাকা
মার্চ ২২ পণ্য বিক্রয় বাবদ চেক প্রাপ্তি ৮,০০০ টাকা
মার্চ ২৫ শফিকের নিকট হতে চেক মারফত ক্রয় ৬,০০০ টাকা
মার্চ ২৮ কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ ৫,০০০ টাকা
উপর্যুক্ত লেনদেনসমূহের জাবেদা দাখিলা প্রদান করে খতিয়ানে স্থানান্তর ও উদ্বৃত্ত নির্ণয় কর ।


হিসাবের তালিকা
- নগদান হিসাব
- মূলধন হিসাব
- আসবাবপত্র হিসাব
- ক্রয় হিসাব
- বিবিধ পাওনাদার হিসাব
- বিক্রয় হিসাবব
- হিঃফেরত হিসাব
- ব্যাংক হিসাব
- বেতন হিসাব




নগদান হিসাব, মূলধন হিসাব, ক্রয় হিসাব, বিক্রয় হিসাব, আসবাবপত্র হিসাব, দেনাদার হিসাব, পাওনাদার হিসাব প্রভৃতি সাধারণ খতিয়ান। প্রতিষ্ঠানে একাধিক দেনাদার ও পাওনাদার বিদ্যমান। সাধারণ খতিয়ানের মধ্য হতে শুধু দেনাদার ও পাওনাদার হিসাবদ্বয়কে মূল হিসাব (Control Accounts) নামে অভিহিত করা হয় ; কারণ দেনাদার ও পাওনাদার উভয় হিসাব দেনাদারবৃন্দ ও পাওনাদারবৃন্দের সমষ্টি ।
সাধারণ খতিয়ানের বাইরে প্রতিটি দেনাদার ও প্রতিটি পাওনাদারের জন্য স্বতন্ত্র খতিয়ান তৈরি করা হয়, যাতে করে নির্দিষ্টভাবে কোনো দেনাদার হতে কত টাকা পাওনা এবং কোনো পাওনাদারের নিকট কত টাকা দেনা রয়েছে সহজে জানা যায় । প্রতিটি দেনাদার ও পাওনাদারের জন্য প্রস্তুতকৃত খতিয়ানকে সহকারী খতিয়ান বলা হয় ।

‘জাবেদা’ অধ্যায়ে ক্রয় জাবেদা সম্পর্কে আমরা ধারণা লাভ করেছি। এখানে ক্রয় জাবেদার তথ্য সাধারণ ও সহকারী খতিয়ানে লিপিবদ্ধকরণ প্রণালি প্রদর্শন করা হলো—


বিশেষ জাবেদা হতে প্রতিদিন সহকারী খতিয়ানে পোস্টিং দেওয়া হয় এবং সাধারণ খতিয়ানে সপ্তাহান্তে মাসান্তে পোস্টিং দেওয়া হয়।
প্রতিটি লেনদেনের জন্য সমপরিমাণ টাকা ডেবিট ও ক্রেডিট পোস্টিং প্রদান করা হয়। খতিয়ানের ডেবিট ব্যালেন্সের সমষ্টি এবং ক্রেডিট ব্যালেন্সের সমষ্টি সমান হওয়া হিসাবের গাণিতিক শুদ্ধতা নির্দেশ করে ।
জনাব রাকিব ২০১৭ সালের জুলাই মাসে নগদ ৩০,০০০ টাকা ও ১৫,০০০ টাকার পণ্য নিয়ে রাকিব ট্রেডার্স নামে ব্যবসায় শুরু করলেন। অন্যান্য লেনদেন ছিল—
জুলাই ২ নগদে পণ্য বিক্রয় ২০,০০০ টাকা
জুলাই ৩ আসবাবপত্র ক্রয় ৫,০০০ টাকা
জুলাই ৫ ব্যাংকে জমা দান ৩,০০০ টাকা
জুলাই ১০ পণ্য ক্রয় ৭,০০০ টাকা
জুলাই ১৫ উত্তোলন ১,০০০ টাকা
জুলাই ২০ কর্মচারীদের বেতন বাবদ চেক প্রদান ২,০০০ টাকা
হিসাবের তালিকা:
১. নগদান হিসাব
২. ক্রয় হিসাব
৩. মূলধন হিসাব
৪. বিক্রয় হিসাব
৫. আসবাবপত্র হিসাব
৬. ব্যাংক হিসাব
৭. উত্তোলন হিসাব
৮. বেতন হিসাব


খতিয়ানের উদ্বৃত্তসমূহ দ্বারা রেওয়ামিল প্রস্তুত করে হিসাবের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই করা যায়। উপরোক্ত খতিয়ানের উদ্বত্ত্বসমূহ নিয়ে রেওয়ামিল প্রস্তুত করা হলো-

খতিয়ানের ডেবিট উদ্বৃত্তসমূহের সমষ্টি ও ক্রেডিট উদ্বৃত্তসমূহের সমষ্টি [৬৫,০০০] সমান হওয়ায় সহজেই বলা যায় হিসাব সংরক্ষণ নির্ভুল হয়েছে।




